তিনি চিরকালই মাটির মানুষ। সাফল্যের শিখর ছুঁয়েও যে এভাবে মাটিতে পা রাখা যায়, তাঁকে দেখেই তা শিখতে হয়। তারকার তকমা গায়ে চাপিয়েও এক্কেবারে আর পাঁচজনের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপনে বিশ্বাসী তিনি। শো-অফ, অহং, বড়াই কিছুই তাঁর ধাঁতে নেই। তাই তো সন্তানের সঙ্গে বিজ্ঞান মেলার ভিড়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পড়তে পারেন নির্দ্বিধায়। তাই তো দলকে বিশ্বকাপ জিতিয়েও কৃতিত্বের সিংহভাগ অংশীদারিত্ব দাবি করেন না। সেই রাহুল দ্রাবিড় এবার যা করলেন, তাতে শ্রদ্ধায় মাথা নত হল দেশবাসীর।
গত মাসেই দ্রাবিড়ের তত্ত্বাবধানে চতুর্থবার যুব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পৃথ্বী শ অ্যান্ড কোং। ভারতীয় জুনিয়র দলের এমন সাফল্যের পরই মোটা অঙ্কের পুরস্কার অর্থের কথা ঘোষণা করেছিল বিসিসিআই। বোর্ড জানিয়েছিল, কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে ৫০ লক্ষ, ক্রিকেটারদের ৩০ লক্ষ এবং অন্যান্য সাপোর্টিং স্টাফদের ২০ লক্ষ টাকা করে অর্থ পুরস্কার দেওয়া হবে। আর এমন বৈষম্যেই আপত্তি জানান মিস্টার ডিপেন্ডবল। তাঁর বক্তব্য, অনূর্ধ্ব ১৯ দলের সাফল্যের জন্য তিনি যা পরিশ্রম করেছেন, বাকি সাপোর্ট স্টাফরা তার চেয়ে কোনও অংশে কম করেননি। তাই পুরস্কার অর্থে বৈষম্য হওয়া উচিত নয়। চলতি মাসেই বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে হওয়ার বৈঠকে নিজের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন দ্য ওয়াল। কিন্তু সাপোর্ট স্টাফদের তুলনায় দ্রাবিড়ের পুরস্কার অর্থের পরিমাণ ছিল অনেকটাই বেশি। তাই সমতা বজায় রাখতে নিজের প্রাপ্যর ৫০ শতাংশ অর্থ বোর্ডকে কমানোর কথা বলেন কিংবদন্তি ভারতীয় ব্যাটসম্যান। যা শুনে বেশ অবাকই হয়েছেন বোর্ড কর্তারা। কিন্তু তিনি যে রাহুল দ্রাবিড়। তাই স্বচ্ছতার প্রসঙ্গে অন্য কারও সঙ্গে তাঁর তুলনা হয় না।একটি সর্বভারতীয় ইংরাজি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ৫০ লক্ষের পরিবর্তে ২৫ লক্ষ টাকা নিচ্ছেন দ্রাবিড়। যাতে বাকি সাপোর্ট স্টাফরাও ২৫ লক্ষ টাকাই পেতে পারেন। শুধু তাই নয়, গত বছর জুনিয়র দলের সঙ্গে থাকা প্রয়াত রাজেশ সাওয়ন্তের পরিবারের হাতেও একই পরিমাণ অর্থ তুলে দেওয়া হবে। দ্রাবিড়ের দেখানো পথে হেঁটে বোর্ড আরও কয়েকজন সাপোর্ট স্টাফকে পুরস্কার অর্থের তালিকাভুক্ত করেছে। যাঁরা গত বছর দলের সঙ্গে ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।